নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট ঝড়, টানা ভারী বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারের প্রভাবে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলা গত ৪৮ থেকে ৩৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। ফলে জেলার অনেক স্থানে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে ও মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে জনজীবন। চরম ভোগান্তি দেখা দিয়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়।
বিশেষ করে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া, সুবর্ণচর, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট, চরজব্বর, চাটখিল উপজেলার অধিকাংশ এলাকা ও সদর অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় মোবাইল টাওয়ার গুলোর ব্যাকআপ শক্তিও শেষ হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে মোবাইল অপারেটরগুলোর নেটওয়ার্ক। এতে করে প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ, জরুরি প্রয়োজনে ডাক্তার ও হাসপাতালে যোগাযোগসহ নিত্য প্রয়োজনীয় অনেক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
চাটখিল উপজেলার বাসিন্দা চাটখিল প্রেসক্লাবের সভাপতি সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়-বৃষ্টিতে চাটখিল উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা যাবত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ফলে মোবাইল নেটওয়ার্ক বিপর্যয় ঘটেছে। বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। ঝড়ে গাছ পড়ে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে, অনেক জায়গায় রাস্তার পাশে গাছ উপড়ে পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ অভিযোগ কেন্দ্রে আমরা বিষয়টি জানিয়েছি। বিদ্যুৎ বিভাগ যদি দ্রুত কাজ করে তাহলে আমরা বিদ্যুৎ পাব।
হাতিয়ার স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সাথে কথা বললে তারা জানান, নিম্নচাপের প্রভাবে ঝড়ে চারদিকে বিধ্বস্ত অবস্থা, তার ওপর গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বিদ্যুৎ নাই। এখন মোবাইলেও নেটওয়ার্ক নাই। কোনো আত্মীয়ের খোঁজ নিতে পারতেছি না। বাচ্চারা ভয়ে আছে, কেউ জানে না সামনে কী হবে। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা দ্রুত পুনরুদ্ধার।
জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, সক্রিয় মৌসুমি নিম্নচাপের কারণে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। নোয়াখালীতে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এ বছরের সর্বোচ্চ।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি নোয়াখালীর জেনারেল ম্যানেজার মোহাম্মদ সরওয়ার জাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ও টানা বৃষ্টির কারণে বহু জায়গায় বৈদ্যুতিক খুঁটি ও লাইনে সমস্যা দেখা দিয়েছে। গাছ পড়ে ছিঁড়ে গেছে বিদ্যুৎ সংযোগ লাইন, পানি ওঠায় অনেক স্থানে মেরামত কাজ করাও সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থানে প্রচুর বাতাস হচ্ছে। আমরা নির্ঘুম কাজ করছি। যেখানে সমস্যা হচ্ছে তা সমাধান করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।