ঢাকা ১১:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৩০ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করেন সোলেমান, বিয়ে দিয়েছেন ৬ মেয়েকে

পিঠা পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া ভার। শীত এলেই বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে। এ সময় বাহারি ধরনের পিঠা বিক্রি করে আয়ও করেন নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ।

তেমনই একজন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের বাসিন্দা সোলেমান। চরএলাহী বাজারে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছেন তিনি। পিঠা বিক্রি করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। সাত মেয়ের মধ্যে ছয় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, সোলেমানের পিঠা মানেই অন্য রকম স্বাদ। একের পর এক লাইন ধরে পিঠা কেনেন ক্রেতারা। দূর-দূরান্ত থেকেও আসেন অনেকে। তার পিঠার সুনাম নোয়াখালীসহ আশপাশের জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। গরম পিঠা খেতে বিকেল থেকে ভিড় লেগে থাকে দোকানে।

জানা যায়, নারিকেল ও খেঁজুর গুড়ের তৈরি ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ঝাল-মসলা পিঠা, সাদা পিঠা, তেলের পিঠা, দুধ পিঠা, মাশকলাইয়ের রুটি, নানা রকম মসলার তৈরি ধনিয়া পাতার চাটনিসহ বাহারি সব পিঠা সোলেমানের দোকানে পাওয়া যায়। এছাড়া সারা বছর নোয়াখালীর আঞ্চলিক সব পিঠা বিক্রি করেন সোলেমান। শীতের শুরুতে বেশি জমে উঠে পুলি পিঠা বিক্রি। শেষ বিকেল থেকেই পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ।

পিঠা বিক্রেতা সোলেমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি সারা বছর পিঠা বিক্রি করি। কিন্তু শীত এলে পিঠা বিক্রির চাপ বেড়ে যায়। এভাবে পিঠা বিক্রি করে ৩০ বছর কেটে গেল। পিঠা তৈরির জন্য উপকরণ বাড়ি থেকে তৈরি করে আনি। আমার সাত মেয়ে আছে, তারাই রেডি করে দেয়। বাজারে বসে কড়াইয়ের জলন্ত তেলে প্রয়োজন মতো ভেজে নেই। তবে চেষ্টা করি পিঠাপ্রেমীদের চাহিদা অনুযায়ী গরম ভেজে দেওয়ার জন্য।

সোলেমান আরও বলেন, পিঠা বিক্রি করে ছয় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। অনেক দূর দূরান্তের মানুষ আসে পিঠা খেতে। নতুন চালের গুড়ো ও নারিকেল চিনি গুড় দিয়ে যত্ন সহকারে পিঠা তৈরি করি। পিঠা প্রতি পিস পাঁচ টাকা করে বিক্রি করি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি চালের পিঠা বিক্রি হয়। শীতের পুলি-পিঠার সঙ্গে বাড়তি হিসেবে ভাপা-চিতই পিঠাও তৈরি করি। এছাড়াও নোয়াখালীর জনপ্রিয় পিঠাগুলো সারা বছর বিক্রি করি।

পাশের ইউনিয়ন মুছাপুর থেকে আসা রফিক মিয়া পিঠা খেতে খেতে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সব ধরনের মানুষ এখানে পিঠা খেতে আসে। আবার কেউ কেউ বাড়িতে ছেলে-মেয়েদের জন্য পিঠা কিনে নিয়ে যায়। ব্যস্ততার কারণে বাড়িতে পিঠা খাওয়ার সময় হয়ে ওঠে না। তাই এখানে সেই স্বাদ নেওয়ার চেষ্টা করছি। বিকেলে সময় পেলেই সোলেমানের দোকানে চলে আসি।

চরহাজারী ইউনিয়নের বাসিন্দা আরাফাত ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখানে প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে পিঠা বানানো ও বিক্রি। সোলেমানের পিঠা খুব জনপ্রিয়। স্বাদ ও ভালো লাগা থেকে এখানে দূরের লোকজনও আসে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নিজের অবৈধ ব্যবসাকে আড়াল করার জন্যই পুলিশের বিরুদ্বে মিথ্যাচারে লিপ্ত টেকনাফের মাদক ব্যবসায়ী করিম মেম্বার

৩০ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করেন সোলেমান, বিয়ে দিয়েছেন ৬ মেয়েকে

আপডেট সময় ১১:১৭:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ নভেম্বর ২০২১

পিঠা পছন্দ করেন না এমন মানুষ পাওয়া ভার। শীত এলেই বাঙালির ঘরে ঘরে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে। এ সময় বাহারি ধরনের পিঠা বিক্রি করে আয়ও করেন নিম্ন আয়ের অনেক মানুষ।

তেমনই একজন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের বাসিন্দা সোলেমান। চরএলাহী বাজারে দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করছেন তিনি। পিঠা বিক্রি করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। সাত মেয়ের মধ্যে ছয় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানায়, সোলেমানের পিঠা মানেই অন্য রকম স্বাদ। একের পর এক লাইন ধরে পিঠা কেনেন ক্রেতারা। দূর-দূরান্ত থেকেও আসেন অনেকে। তার পিঠার সুনাম নোয়াখালীসহ আশপাশের জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। গরম পিঠা খেতে বিকেল থেকে ভিড় লেগে থাকে দোকানে।

জানা যায়, নারিকেল ও খেঁজুর গুড়ের তৈরি ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ঝাল-মসলা পিঠা, সাদা পিঠা, তেলের পিঠা, দুধ পিঠা, মাশকলাইয়ের রুটি, নানা রকম মসলার তৈরি ধনিয়া পাতার চাটনিসহ বাহারি সব পিঠা সোলেমানের দোকানে পাওয়া যায়। এছাড়া সারা বছর নোয়াখালীর আঞ্চলিক সব পিঠা বিক্রি করেন সোলেমান। শীতের শুরুতে বেশি জমে উঠে পুলি পিঠা বিক্রি। শেষ বিকেল থেকেই পিঠার স্বাদ নিতে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ।

পিঠা বিক্রেতা সোলেমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি সারা বছর পিঠা বিক্রি করি। কিন্তু শীত এলে পিঠা বিক্রির চাপ বেড়ে যায়। এভাবে পিঠা বিক্রি করে ৩০ বছর কেটে গেল। পিঠা তৈরির জন্য উপকরণ বাড়ি থেকে তৈরি করে আনি। আমার সাত মেয়ে আছে, তারাই রেডি করে দেয়। বাজারে বসে কড়াইয়ের জলন্ত তেলে প্রয়োজন মতো ভেজে নেই। তবে চেষ্টা করি পিঠাপ্রেমীদের চাহিদা অনুযায়ী গরম ভেজে দেওয়ার জন্য।

সোলেমান আরও বলেন, পিঠা বিক্রি করে ছয় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। অনেক দূর দূরান্তের মানুষ আসে পিঠা খেতে। নতুন চালের গুড়ো ও নারিকেল চিনি গুড় দিয়ে যত্ন সহকারে পিঠা তৈরি করি। পিঠা প্রতি পিস পাঁচ টাকা করে বিক্রি করি। প্রতিদিন ৮-১০ কেজি চালের পিঠা বিক্রি হয়। শীতের পুলি-পিঠার সঙ্গে বাড়তি হিসেবে ভাপা-চিতই পিঠাও তৈরি করি। এছাড়াও নোয়াখালীর জনপ্রিয় পিঠাগুলো সারা বছর বিক্রি করি।

পাশের ইউনিয়ন মুছাপুর থেকে আসা রফিক মিয়া পিঠা খেতে খেতে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সব ধরনের মানুষ এখানে পিঠা খেতে আসে। আবার কেউ কেউ বাড়িতে ছেলে-মেয়েদের জন্য পিঠা কিনে নিয়ে যায়। ব্যস্ততার কারণে বাড়িতে পিঠা খাওয়ার সময় হয়ে ওঠে না। তাই এখানে সেই স্বাদ নেওয়ার চেষ্টা করছি। বিকেলে সময় পেলেই সোলেমানের দোকানে চলে আসি।

চরহাজারী ইউনিয়নের বাসিন্দা আরাফাত ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখানে প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে পিঠা বানানো ও বিক্রি। সোলেমানের পিঠা খুব জনপ্রিয়। স্বাদ ও ভালো লাগা থেকে এখানে দূরের লোকজনও আসে।