ঢাকা ০৯:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকার দলের নেতারা সহ প্রশাসনের উচ্চ পযার্য়ের কর্মকর্তাদের চাপে উপজেলা প্রশাসন স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারেনা

  • গুলজার সৈকত
  • আপডেট সময় ০১:৪৯:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩
  • ২২৮৪ Time View

সরকার দলের নেতারা সহ প্রশাসনের উচ্চ পযার্য়ের কর্মকর্তাদের চাপে উপজেলা প্রশাসন স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারেনা

চাটখিল প্রতিনিধিঃ
সরকারি দলের কিছু নেতাসহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের চাপে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারছে না চাটখিল উপজেলা প্রশাসন। এতে করে চাটখিলে দিনের পর দিন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল বুধবার বিকেলে চাটখিল উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই তথ্য বের হয়ে আসে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চাটখিলে আইন শৃঙ্খলা অবনতি সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন বক্তা অভিমত ব্যক্ত করেন।
এক পর্যায়ে সভায় উপস্থিত সাংবাদিক জসিম মাহমুদ পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডে পৌরসভা কর্তৃক সলিং করা রাস্তার উপরে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করার প্রসঙ্গ এনে জানতে চান।
ঐ বাড়ির লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে গত ২৩ আগস্ট ( বুধবার) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে শুনানি শেষে রাস্তা দখলকারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বিআরডিবি’র সাবেক চেয়ারম্যান আহম্মেদ হোসেন সোহাগ কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একদিনের মধ্যে রাস্তা দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেন।
কিন্তু ঐ নির্দেশের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও রাস্তা দখলমুক্ত না হওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, তিনি কাগজপত্র পর্যালোচনাকালে প্রমানিত হয় আহমেদ হোসেন সোহাগ প্রায় তিন বছর আগে রাস্তায় অনুরূপভাবে বেড়া দিয়ে ঐ বারেক হাওলাদার বাড়ির এক প্রবাসীর কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। এবারও একই কায়দায় চাঁদা আদায়ের লক্ষ্যে তিনি এই কাজ করেছেন। তিনি বারেক হাওলাদার বাড়ির পাশে ৪০৩ দাগে কিছু জায়গায় খরিদ করে সেখানে বসবাস করে আসছেন।
কিন্তু রাস্তাটি ৪০২ দাগে, সেখানে তার কোন মালিকানা নেই। যার ফলে তাকে রাস্তা দখলমুক্ত করে চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঐ নির্দেশ দেওয়ার পর তিনি স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাদের দিয়ে এবং সরকারের উচ্চ পযার্য়ের কর্মকর্তা দিয়েও আমার ( ইউএনও) উপর চাপ সৃষ্টি করাতে থাকেন। তাই তিনি (ইউএনও) এ ব্যাপারে আর কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

সভায় উপস্থিত আইন শৃঙ্খলা কমিটির উপদেষ্টা ও চাটখিল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কবির সহ উপস্থিত সকলে বিষয়টি জানতে পেরে সকলের মাঝে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। সভায় ওসি (তদন্ত) আবু জাফর, চাটখিল পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন, সকল ইউপি চেয়ারম্যান সহ আইন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তার অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করে বলেন, তিনি চলাচলের রাস্তা দখল করে রাখার বিষয়ে অভিযোগকারীদের আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য আহমেদ হোসেন সোহাগ বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে বিআরডিবি’র ১কোটি ৫লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে দুদকের মামলায় গ্রেফতার হয়ে ৩ মাস জেল হাজত খেটে জামিনে রয়েছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরো বিভিন্ন চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Noakhalir Patrika

প্রকাশক সম্পাদক গুলজার হোসেন সৈকত সার্বিক যোগাযোগ 01711577700 gulzar.shykot@gmail.com
জনপ্রিয় সংবাদ

রাতের আধাঁরে কাটল শত বছরের বটবৃক্ষ —————————————————————- চাটখিলে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ উপেক্ষা করে মার্কেট নির্মাণ

সরকার দলের নেতারা সহ প্রশাসনের উচ্চ পযার্য়ের কর্মকর্তাদের চাপে উপজেলা প্রশাসন স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারেনা

আপডেট সময় ০১:৪৯:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৩

সরকার দলের নেতারা সহ প্রশাসনের উচ্চ পযার্য়ের কর্মকর্তাদের চাপে উপজেলা প্রশাসন স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারেনা

চাটখিল প্রতিনিধিঃ
সরকারি দলের কিছু নেতাসহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের চাপে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারছে না চাটখিল উপজেলা প্রশাসন। এতে করে চাটখিলে দিনের পর দিন সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল বুধবার বিকেলে চাটখিল উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই তথ্য বের হয়ে আসে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চাটখিলে আইন শৃঙ্খলা অবনতি সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন বক্তা অভিমত ব্যক্ত করেন।
এক পর্যায়ে সভায় উপস্থিত সাংবাদিক জসিম মাহমুদ পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডে পৌরসভা কর্তৃক সলিং করা রাস্তার উপরে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করার প্রসঙ্গ এনে জানতে চান।
ঐ বাড়ির লোকজনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে গত ২৩ আগস্ট ( বুধবার) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে শুনানি শেষে রাস্তা দখলকারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বিআরডিবি’র সাবেক চেয়ারম্যান আহম্মেদ হোসেন সোহাগ কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একদিনের মধ্যে রাস্তা দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেন।
কিন্তু ঐ নির্দেশের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও রাস্তা দখলমুক্ত না হওয়ার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানান, তিনি কাগজপত্র পর্যালোচনাকালে প্রমানিত হয় আহমেদ হোসেন সোহাগ প্রায় তিন বছর আগে রাস্তায় অনুরূপভাবে বেড়া দিয়ে ঐ বারেক হাওলাদার বাড়ির এক প্রবাসীর কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন। এবারও একই কায়দায় চাঁদা আদায়ের লক্ষ্যে তিনি এই কাজ করেছেন। তিনি বারেক হাওলাদার বাড়ির পাশে ৪০৩ দাগে কিছু জায়গায় খরিদ করে সেখানে বসবাস করে আসছেন।
কিন্তু রাস্তাটি ৪০২ দাগে, সেখানে তার কোন মালিকানা নেই। যার ফলে তাকে রাস্তা দখলমুক্ত করে চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঐ নির্দেশ দেওয়ার পর তিনি স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাদের দিয়ে এবং সরকারের উচ্চ পযার্য়ের কর্মকর্তা দিয়েও আমার ( ইউএনও) উপর চাপ সৃষ্টি করাতে থাকেন। তাই তিনি (ইউএনও) এ ব্যাপারে আর কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।

সভায় উপস্থিত আইন শৃঙ্খলা কমিটির উপদেষ্টা ও চাটখিল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কবির সহ উপস্থিত সকলে বিষয়টি জানতে পেরে সকলের মাঝে বিব্রতকর অবস্থার সৃষ্টি হয়। সভায় ওসি (তদন্ত) আবু জাফর, চাটখিল পৌর মেয়র নিজাম উদ্দিন, সকল ইউপি চেয়ারম্যান সহ আইন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তার অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করে বলেন, তিনি চলাচলের রাস্তা দখল করে রাখার বিষয়ে অভিযোগকারীদের আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

উল্লেখ্য আহমেদ হোসেন সোহাগ বিআরডিবি’র চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে বিআরডিবি’র ১কোটি ৫লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে দুদকের মামলায় গ্রেফতার হয়ে ৩ মাস জেল হাজত খেটে জামিনে রয়েছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরো বিভিন্ন চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।