মোবাইলে এক বছর প্রেম, পালিয়ে এসে দেখেন প্রেমিক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
মোবাইলে পরিচয়। এরপর এক বছর ধরে চলে কথোপকথন। গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। সবশেষ প্রেমের টানে দুই সন্তানের জননী এসে হাজির হন প্রেমিকের বাড়িতে। এসে দেখেন প্রেমিক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। অবশ্য দুজন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) রাতে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে
ওই যুবকের নাম রাসেল (২৭)। তিনি হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রামের বাসিন্দা। প্রেমিকা রেবা আক্তার সুমি (২২) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট ইউনিয়নের বাসিন্দা।
রাসেলের বড় ভাই রিকশাচালক মো. জামশেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা আগে কিছুই জানতাম না। সুমি হঠাৎ আমাদের বাড়িতে এসে হাজির হয়। রাসেল দৃষ্টিহীন। তার সংসার চালানোর সক্ষমতা নেই। এসব বলার পরও রাসেলকে বিয়ে করবে বলে সিদ্ধান্তে অটল থাকেন সুমি। পরে দুজনকে নিয়ে আসা হয় হাতিয়া থানায়। থানা থেকে সুমির বাড়িতে যোগাযোগ করা হলেও তার বাবা-মা সাড়া দেননি। সবশেষ বৃহস্পতিবার দুজনের সম্মতিতে বিয়ে হয়।’
এ বিষয়ে রেবা আক্তার সুমি বলেন, ‘রাসেলের এক বন্ধুর মাধ্যমে মোবাইলফোনে আমাদের দুজনের পরিচয় হয়। এরপর থেকে তার সঙ্গে প্রতিদিন ফোনে কথা হতো। এতে দুজনের মধ্যে ভালোবাসা ও আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়। আমার আগের সংসারে দুটি সন্তান আছে। আগের স্বামী ট্রাকচালক ছিলেন। তার সঙ্গে দুই বছর আগে সম্পর্ক ছিন্ন হয়। এসব জেনেও রাসেল আমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছেন।’
সুমি আরও বলেন, ‘রাসেল দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী, এটা আমি আগে জানতাম না। তার চোখের সমস্যা আছে বলে আমাকে জানিয়েছিল। কিন্তু একেবারেই দৃষ্টিহীন, এটা বলেননি। এখন যেহেতু চলে এসেছি, তাই ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়ে বিয়ে করেছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’
এ বিষয়ে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, রাসেলের ভাই থানায় এসে বিষয়টি জানিয়েছেন। পরে পুলিশ পাঠিয়ে দুজনকে থানায় আনা হয়। সুমির দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী তার অভিভাবকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তারা কেউ আসেননি। যেহেতু তারা দুজন প্রাপ্তবয়স্ক, তাই নিজেদের যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আইনগত অধিকার তাদের রয়েছে।