বেগমগঞ্জে প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্বামীকে হত্যা করেন স্ত্রী সুরমা
বেগমগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ব্যবসায়ী আবদুল কুদ্দুসকে (৫১) বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। বিদ্যুতের তার দিয়ে পা পেঁচিয়ে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে পরকীয়া প্রেমিক মো. ইসমাইলের (৩১) সহায়তায় তাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী সুরমা আক্তার (৩৮)।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন।
এর আগে, সুরমা আক্তার ও মো. ইসমাইল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন জানান, নিহতের স্ত্রী সুরমা আক্তার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গ্রামের টাইলস মিস্ত্রি মো. ইসমাইলের মধ্যে আব্দুল কুদ্দুছের বাড়িতে টাইলসের কাজের সুবাদে বিবাহবহির্ভূত প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীতে মো. ইসমাইল বিদেশে চলে যায়। বিদেশে যাওয়ার পরও তাদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত থাকে।
ইসমাইল ৬ সেপ্টেম্বর দেশে এসে বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে পার্শ্ববর্তী সেনবাগে মোহাম্মদপুরে এক খালার বাসায় আত্মগোপন করে। ওখান থেকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী নিহতের বাসার ছাদে লুকিয়ে থাকে। পরে রাতে আব্দুল কুদ্দুস ঘুমিয়ে পড়লে সুরমা আক্তার ইসমাইলকে ছাদ থেকে ডেকে নিয়ে আসেন। এ সময় বিদ্যুতের সকেট যুক্ত তার দিয়ে পা পেঁচিয়ে এক মাথায় থাকা প্লাগের মাধ্যমে সুইচে কানেকশন দিয়ে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে আব্দুল কুদ্দুসের মৃত্যু নিশ্চিত করেন তারা। পরে অন্য একটি কক্ষে রেখে যান।
সুরমা আক্তার তার পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘ডাকাত এসেছে’ বলে চিৎকার-চেঁচামেচি করে। লোকজন জড়ো হলে ডাকাত দল এসে তার স্বামীকে হত্যা করেছে তাদের জানায়।
বিজয়া সেন আরও জানান, নিহত কুদ্দুসের স্ত্রী সুরমা আক্তারের দেওয়া তথ্য থেকে সেনবাগের মোহাম্মদপুর থেকে আসামি মো. ইসমাইলকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বৈদ্যুতিক তার, মো. ইসমাইলের পাসপোর্ট, আসামিদের ব্যবহৃত মোবাইল ২টি জব্দ করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার রাতের প্লাইটে ইসমাইলের বিদেশ চলে যাওয়ার কথা ছিল।
এই সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাজীব (বেগমগঞ্জ সার্কেল), বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম।