ঢাকা ০৯:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ অগ্নিসংযোগ লুটপাট

  • গুলজার সৈকত
  • আপডেট সময় ০৫:০৬:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০২৩
  • ২২৭৯ Time View

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ অগ্নিসংযোগ লুটপা

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ফেইসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে দুই ইউপি সদস্যের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও সাবেক ইউপি সদস্যের বাড়িতে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিরবিরি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) জসিম উদ্দিন বাড়িতে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ২৭ জুন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য (মেম্বার) মিরাজ উদ্দিন ও সাবেক মেম্বার জসিম উদ্দিনের অনুসারীদের মধ্যে উপজেলার সেন্টার বাজারে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা হয়। সংঘর্ষে জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মিরাজ উদ্দিন ও সাবেক ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিনসহ দুই গ্রুপের অন্তত চারজন আহত হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ২৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার মিরাজ উদ্দিন ও বাশার মেম্বারের ছবি দিয়ে ফেসবুকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান হেদায়েত উল্লাহ নামে তাদের এক অনুসারী। ওই পোস্টে সাবেক ইউপি সদস্য জসিমের ছোট ছেলে সৈকত তেলবাজ বলে মন্তব্য করে। এ মন্তব্যের জের ধরে হেদায়েত জসিম মেম্বারের ছেলে সৈকতকে হাত কেটে ফেলার হুমকি দেয়।

এ নিয়ে একপর্যায়ে সৈকত তাকে ডেকে নিয়ে মারধর করে। এরপর বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়ে যায়। পরে পুনরায় হেদায়েতকে সেন্টার বাজারের শামসু ডাক্তারের দোকানে হামলা চালায় জসিম মেম্বারের ছেলে ও ভাতিজারা। ওই সময় শামসু ডাক্তারের দোকানের কয়েকটি কাচের শোকেস ভেঙ্গে যায়।
খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে বিষয়টি সমাধান করতে ঘটনাস্থলে যায় জসিম মেম্বার। সেখানে মিলাদ ও মিরাজ মেম্বারের নেতৃত্বে জসিম মেম্বারকে বেধড়ক মারধর করা হয়। কিছুক্ষণ পর জসিম মেম্বার তার অনুসারীদের একত্রিত করে মিরাজ মেম্বারের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। পাল্টাপাল্টি এ হামলার জের ধরে শুক্রবার দুপুরের দিকে মিরাজ মেম্বারের অনুসারী আবুল বাশার মেম্বার ও মিলাদের নেতৃত্বে জসিম মেম্বারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে ক্ষতি সাধন করে।

জসিম মেম্বারের ভাতিজী ফারহানা বৃষ্টি অভিযোগ করেন, বাশার মেম্বার ও যুবলীগ নেতা মিলাদের নেতৃত্বে দুই শতাধিক সন্ত্রাসী আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ৩টি বসত ঘরে ব্যাপক ভাংচুর করে ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। হামলাকারীরা আমাদের মোটরসাইকেল, সাইকেল, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। হামলাকারী আমার চাচা জসিম মেম্বারকে সেন্টার বাজারে প্রকাশ্যে কুপিয়ে আহত করে এখন হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাহাজমারা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মাহমুদ ও ইউপি সদস্য মিরাজ উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
জাহাজমারা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি (সদস্য) আবুল বাশার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, জসিম মেম্বারের বাড়িতে হামলার অভিযোগ সাজানো। ফেসবুক কমেন্টসের সূত্র ধরে এই ঘটনা ঘটে। মিরাজ মেম্বার গুরুত্বর আহত অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, একটি মারামারির ঘটনার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Noakhalir Patrika

প্রকাশক সম্পাদক গুলজার হোসেন সৈকত সার্বিক যোগাযোগ 01711577700 gulzar.shykot@gmail.com
জনপ্রিয় সংবাদ

রাতের আধাঁরে কাটল শত বছরের বটবৃক্ষ —————————————————————- চাটখিলে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ উপেক্ষা করে মার্কেট নির্মাণ

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ অগ্নিসংযোগ লুটপাট

আপডেট সময় ০৫:০৬:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ জুন ২০২৩

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ অগ্নিসংযোগ লুটপা

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ফেইসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে দুই ইউপি সদস্যের অনুসারীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও সাবেক ইউপি সদস্যের বাড়িতে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিরবিরি গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য (মেম্বার) জসিম উদ্দিন বাড়িতে ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ২৭ জুন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য (মেম্বার) মিরাজ উদ্দিন ও সাবেক মেম্বার জসিম উদ্দিনের অনুসারীদের মধ্যে উপজেলার সেন্টার বাজারে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা হয়। সংঘর্ষে জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য মিরাজ উদ্দিন ও সাবেক ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিনসহ দুই গ্রুপের অন্তত চারজন আহত হন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ২৭ জুন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে জাহাজমারা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার মিরাজ উদ্দিন ও বাশার মেম্বারের ছবি দিয়ে ফেসবুকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান হেদায়েত উল্লাহ নামে তাদের এক অনুসারী। ওই পোস্টে সাবেক ইউপি সদস্য জসিমের ছোট ছেলে সৈকত তেলবাজ বলে মন্তব্য করে। এ মন্তব্যের জের ধরে হেদায়েত জসিম মেম্বারের ছেলে সৈকতকে হাত কেটে ফেলার হুমকি দেয়।

এ নিয়ে একপর্যায়ে সৈকত তাকে ডেকে নিয়ে মারধর করে। এরপর বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়ে যায়। পরে পুনরায় হেদায়েতকে সেন্টার বাজারের শামসু ডাক্তারের দোকানে হামলা চালায় জসিম মেম্বারের ছেলে ও ভাতিজারা। ওই সময় শামসু ডাক্তারের দোকানের কয়েকটি কাচের শোকেস ভেঙ্গে যায়।
খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে বিষয়টি সমাধান করতে ঘটনাস্থলে যায় জসিম মেম্বার। সেখানে মিলাদ ও মিরাজ মেম্বারের নেতৃত্বে জসিম মেম্বারকে বেধড়ক মারধর করা হয়। কিছুক্ষণ পর জসিম মেম্বার তার অনুসারীদের একত্রিত করে মিরাজ মেম্বারের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। পাল্টাপাল্টি এ হামলার জের ধরে শুক্রবার দুপুরের দিকে মিরাজ মেম্বারের অনুসারী আবুল বাশার মেম্বার ও মিলাদের নেতৃত্বে জসিম মেম্বারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়ে ক্ষতি সাধন করে।

জসিম মেম্বারের ভাতিজী ফারহানা বৃষ্টি অভিযোগ করেন, বাশার মেম্বার ও যুবলীগ নেতা মিলাদের নেতৃত্বে দুই শতাধিক সন্ত্রাসী আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলাকারীরা ৩টি বসত ঘরে ব্যাপক ভাংচুর করে ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। হামলাকারীরা আমাদের মোটরসাইকেল, সাইকেল, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। হামলাকারী আমার চাচা জসিম মেম্বারকে সেন্টার বাজারে প্রকাশ্যে কুপিয়ে আহত করে এখন হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাহাজমারা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিলাদ মাহমুদ ও ইউপি সদস্য মিরাজ উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
জাহাজমারা ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি (সদস্য) আবুল বাশার অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, জসিম মেম্বারের বাড়িতে হামলার অভিযোগ সাজানো। ফেসবুক কমেন্টসের সূত্র ধরে এই ঘটনা ঘটে। মিরাজ মেম্বার গুরুত্বর আহত অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

হাতিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন বলেন, একটি মারামারির ঘটনার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে।