ঢাকা ০১:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীর একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ভূয়া মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আটক

  • গুলজার সৈকত
  • আপডেট সময় ০৪:৫৮:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০২৩
  • ২৩১৫ Time View
  • নোয়াখালীর একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ভূয়া মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আটক

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর গুডহিল হাসপাতাল থেকে নুরুল হাসান (৫০) নামের এক কথিত মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞকে আটক করে পুলিশের সোপর্দ করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক নুরুল হাসান স্বীকার করেছে কোনো প্রকার চিকিৎসক সনদ ও শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়া তিনি গত কয়েক বছর যাবত বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের ঘটনায় একটি মামলা রয়েছে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।
শনিবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টার দিকে নোয়াখালীর মাইজদী শহরের গুডহিল হাসপাতাল থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক নুরুল হাসান নিজেকে বগুড়ার সদর উপজেলার ফুলবাড়ি দক্ষিণপাড়া গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে বলে দাবি করেন। সে অনুযায়ী একটি জাতীয় পরিচয়পত্রও রয়েছে। তবে পুলিশের তথ্যমতে, নুরুল হাসানের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায়।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, আটক নুরুল হাসান ২০২০ সাল থেকে মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে নোয়াখালীর গুডহিল হসপিটাল কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে চেম্বার করে আসছিলেন। এর আগে তিনি কক্সবাজারে চেম্বার করতেন।

রোগীদের দেখার পর তাদের ওষুধ দেওয়া এবং রিপোর্ট নিয়ে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সন্দেহ তৈরি হয়। নুরুল হাসানের দেওয়া হৃদরোগের ইকো রিপোর্ট নিয়ে অপারেশন করে অনেক রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের অজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ডা. আবু তাহের তার কিছু ভুল রিপোর্ট দেখলে সন্দেহ আরও জোরালো হয়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যায় তাকে কৌশলে মাইজদীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ডেকে আনেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধিরা। দীর্ঘসময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বিএমডিসি সনদ যাচাইবাছাইয়ের এক পর্যায়ে তার সনদগুলোতে ব্যাপক গরমিল পাওয়া যায়। এর একপর্যায়ে তিনি নিজে এসব সনদ ভুয়া বলে স্বীকার করলে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তিনি আগে সৌদি আরবের বিভিন্ন হাসপাতালেও এসব ভুয়া সনদে চেম্বার প্র্যাক্টিস করতেন বলে জানা যায়।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নুরুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে আমরা তাকে ডেকে এনে সনদগুলো পরীক্ষা করার পর তিনি ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। তিনি জানিয়েছেন বিএমডিসির নাম্বারটি ঠিক থাকলেও একই নাম ও নম্বর ব্যবহার করে সনদটি তিনি অসাধু উপায়ে বানিয়ে নিয়েছিল। তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আমাদের অফিসের একজন কর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করবেন।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ভুয়া সনদে চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে থানায় হস্তান্তর করেছে। আটক নুরুল হাসানের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে করা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে জয়পুরহাট থানায় একটি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস
আপলোডকারীর তথ্য

Noakhalir Patrika

প্রকাশক সম্পাদক গুলজার হোসেন সৈকত সার্বিক যোগাযোগ 01711577700 gulzar.shykot@gmail.com
জনপ্রিয় সংবাদ

নিজের অবৈধ ব্যবসাকে আড়াল করার জন্যই পুলিশের বিরুদ্বে মিথ্যাচারে লিপ্ত টেকনাফের মাদক ব্যবসায়ী করিম মেম্বার

নোয়াখালীর একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ভূয়া মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আটক

আপডেট সময় ০৪:৫৮:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ জুলাই ২০২৩
  • নোয়াখালীর একটি প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ভূয়া মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আটক

নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর গুডহিল হাসপাতাল থেকে নুরুল হাসান (৫০) নামের এক কথিত মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞকে আটক করে পুলিশের সোপর্দ করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক নুরুল হাসান স্বীকার করেছে কোনো প্রকার চিকিৎসক সনদ ও শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়া তিনি গত কয়েক বছর যাবত বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতনের ঘটনায় একটি মামলা রয়েছে বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।
শনিবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টার দিকে নোয়াখালীর মাইজদী শহরের গুডহিল হাসপাতাল থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক নুরুল হাসান নিজেকে বগুড়ার সদর উপজেলার ফুলবাড়ি দক্ষিণপাড়া গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে বলে দাবি করেন। সে অনুযায়ী একটি জাতীয় পরিচয়পত্রও রয়েছে। তবে পুলিশের তথ্যমতে, নুরুল হাসানের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ এলাকায়।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, আটক নুরুল হাসান ২০২০ সাল থেকে মেডিসিন ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ হিসেবে নোয়াখালীর গুডহিল হসপিটাল কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল এবং ক্লিনিকে চেম্বার করে আসছিলেন। এর আগে তিনি কক্সবাজারে চেম্বার করতেন।

রোগীদের দেখার পর তাদের ওষুধ দেওয়া এবং রিপোর্ট নিয়ে সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের সন্দেহ তৈরি হয়। নুরুল হাসানের দেওয়া হৃদরোগের ইকো রিপোর্ট নিয়ে অপারেশন করে অনেক রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের অজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ডা. আবু তাহের তার কিছু ভুল রিপোর্ট দেখলে সন্দেহ আরও জোরালো হয়। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার সন্ধ্যায় তাকে কৌশলে মাইজদীর একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ডেকে আনেন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধিরা। দীর্ঘসময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বিএমডিসি সনদ যাচাইবাছাইয়ের এক পর্যায়ে তার সনদগুলোতে ব্যাপক গরমিল পাওয়া যায়। এর একপর্যায়ে তিনি নিজে এসব সনদ ভুয়া বলে স্বীকার করলে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। তিনি আগে সৌদি আরবের বিভিন্ন হাসপাতালেও এসব ভুয়া সনদে চেম্বার প্র্যাক্টিস করতেন বলে জানা যায়।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নুরুল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে আমরা তাকে ডেকে এনে সনদগুলো পরীক্ষা করার পর তিনি ভুয়া বলে প্রমাণিত হয়। তিনি জানিয়েছেন বিএমডিসির নাম্বারটি ঠিক থাকলেও একই নাম ও নম্বর ব্যবহার করে সনদটি তিনি অসাধু উপায়ে বানিয়ে নিয়েছিল। তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আমাদের অফিসের একজন কর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করবেন।

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ভুয়া সনদে চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা নুরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে থানায় হস্তান্তর করেছে। আটক নুরুল হাসানের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে করা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে জয়পুরহাট থানায় একটি মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।