নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘ ১৭ বছর পর নোয়াখালী জেলা জামায়াতের রোকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটি এম মাসুম।
এ সময় প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, দেশের মানুষের উন্নয়নের ও ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জামায়াত ও জনতার ঐক্য প্রয়োজন। স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার ১৫ বছর দেশের জনগণের উপর জুলুম নির্যাতন করে পাঞ্জাবিদের ঘৃণিত কাজকে ও হার মানিয়েছে । পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও ভারতের ইশারায় সেনাবাহিনীর যোগ্য অফিসার হত্যার সাথে শেখ হাসিনা সরকার জড়িত।
রোবাবর (১৩ অক্টোবর) সকালে নোয়াখালী জেলা একটি কমিনউটি সেন্টারে জেলা জামায়েত আমীর মাও. ইসহাক খন্দকারের সভাপতিত্বে এ রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বক্তব্যে মাওলানা এটিএম মাসুম বলেন, শেয়ার মার্কেট কেলেংকারী করে লক্ষ বিনিয়োগকারীকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। বিদ্যুৎ বন্ধ করে অন্ধকারে মতিঝিলে হেফাজতের মাহফিলে নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড চালিয়ে অসংখ্য ট্রাক ভর্তি করে লাশ মাটি চাপা দিয়েছে, অসংখ্য ভাইকে ঘুম করে আয়নাঘরের মতো নৃশংসতার নজির স্থাপন করেছে। লাখ লাখ নারী-পুরুষকে মামলা দিয়েছে, সাজা দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস, ব্যাংক লুট করে যার মধ্যে ইসলামি ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এস.আলমকে দিয়ে লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট করার সুযোগ করে দিয়েছে হাসিনা সরকার। লুটপাট করা এসকল সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে।
শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে এ নেতা বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে হিন্দুত্ববাদী শিক্ষাব্যবস্থায় রূপান্তর করে হিন্দু লেখকদের লিখিত পাঠ্যক্রম আমাদের সন্তানদের উপর চাপিয়ে দেয়। ইসলামি নীতিমালার শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করে, প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে, সকল মাদ্রাসা এবং কওমী মাদ্রাসার শিক্ষাকে ধ্বংস করে। সব জায়গায় ইসলাম বিদ্বেষী প্রথা চাপিয়ে দেয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকরা, উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট থেকে রাব্বি জিদনী ইলমা বাতিল করেছে। হিন্দু, সেকুলার ও নাস্তিকদের লেখা বই দিয়ে ইসলামি শিক্ষানীতি ধ্বংস করেছে।
পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে সবচেয়ে বেশি গুম, খুন, হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। পুলিশবাহিনীকে সবচেয়ে বড় দূর্নীতিগ্রস্থ করে প্রস্তুত করা হয়েছে। হাসিনা সরকার সীমান্ত হত্যার বিচার করেনি এবং কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করে ভারতের এজেন্ডা ও প্রয়োজন পূরণ করেছে। বাংলাদেশেকে ভারতের মার্কেটে পরিনত করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিলো, বাংলাদেশকে পরিপূর্ণ ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার মতো জঘন্য পরিকল্পনা স্থাপনের চেষ্টা চালিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আল্লাহ জালিমকে ছাড়দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না।তার আমলে অগণিত আলেম নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তারই প্রেক্ষিতে দুধের শিশু কোলে নিয়ে মায়েরা, ভাইয়েরা, সাধারণ সর্বস্তরের জনগণ স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এভাবে ৫ আগস্ট বিপ্লব বা দ্বীতিয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।
হাসিনা দেশে মানুষের কল্যানের জন্য আসেনি বরং ক্ষমতায় এসেছিলো তার বাবার হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য৷ হাসিনার আমলে
জঘন্য ভোটকারচুপির নির্বাচন সংঘটিত হয়। আলোর সম্ভাবনা দেখা ৫ই আগস্টের পরিবর্তেশেষ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। আমাদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে, সেজন্য আমাদের ও সংগঠনকে প্রস্তুত করতে হবে। দেশগড়ার কাজকে সকলে মিলে শতভাগ কাজে লাগাতে হবে। এ জমিনকে গড়ে তুলতে হলে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
রুকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কুমিল্লা মহানগরীর আমির কাজী দীন মোহাম্মদ, কুমিল্লা অঞ্চলের টিম সদস্য প্রফেসর লিয়াকত আলী ভুইয়া,জেলা সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিন এর সঞ্চালনায় অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।