কোম্পানীগঞ্জে সন্ত্রাসীদের পিটুনীতে যুবলীগ নেতা নিহত
নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের মিলনকে (৩৫) পিটিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
সন্ত্রাসীদের হাত থেকে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে শনিবার সকাল ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে শুক্রবার রাতে চরপার্বতী ২নং ওয়ার্ডের রহিমিয়া এতিমখানার পাশে সন্ত্রাসীরা তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
নিহত আবদুল কাদের মিলন চরহাজারী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইসমাইল হোসেনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনীতির পাশাপাশি ঠিকাদারী ব্যবসা করতেন মিলন। ৫ আগস্টের পর অনেকটা গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন। গত সপ্তাহে ওমরাহ শেষ করে দেশে ফেরেন। এক নিকট আত্মীয় স্ট্রোকরোগীকে দেখতে শুক্রবার রাতে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এ সময় চৌধুরীহাট-আমতলী রোডের ২৪ ঘণ্টা এলাকায় ওঁৎ পেতে থাকা ২০-২২ জনের সন্ত্রাসীদল পথ রোধ করে সিএনজি থেকে নামিয়ে মিলনকে ব্যাপক মারধর করে।
খবর পেয়ে পুলিশ দুই দফায় গেলেও তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। এক পর্যায়ে খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে মিলনকে উদ্ধার করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে শনিবার সকালে ঢাকায় নেওয়ার পথে কাঁচপুর এলাকায় তার মৃত্যু হয়।
নিহতের ছোট ভাই আব্দুর রহীম রাকিব বলেন, রাত ৯টার দিকে আমার ভাই মিলনের ফোন পেয়ে দাগনভূঞা থেকে নিজ সিএনজি যোগে ফেরার পথে চুয়ানিরটেক এলাকায় আমাদের সিএনজিকে অনুসরণ করে ২-৩টি মোটরসাইকেল। বিষয়টি আমার ভাই মিলন বুঝতে পেরে তার মামাশ্বশুর যুবদল নেতা মাইন উদ্দিনকে মোবাইলে অবগত করেন। এরমধ্যে মোটরসাইকেল আরোহীরা আমাদের সিএনজির গতিরোধ করে ও আমার ভাই মিলনকে ছিনিয়ে নিয়ে রহিমিয়া এতিমখানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ৪ ঘণ্টা আটকে রেখে লোহার পাইপ দিয়ে দফায় দফায় পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। যুবদল নেতা মাইন উদ্দিন তাকে বাঁচাতে গেলেও হামলাকারীদের তোপের মুখে পড়ে তিনি চলে যান। পরে পুলিশ এসে নিয়ন্ত্রণ না করলে আমাকেও হত্যা করতো সন্ত্রাসীরা। সন্ত্রাসীরা বলে, দুটো ব্যাগে অস্ত্র ছিল সেগুলো কি করছস, এটা বলে কাপড়-চোপড় ও মালামালের দুটো ব্যাগও নিয়ে যায়। নিহতের ভাই আবদুর রহিম রাকিব বাদী হয়ে হত্যা মামলা করবেন বলে জানান।
নিহতের স্ত্রী বিবি জুলেখা বলেন, জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাসীরা আমার স্বামীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। তবে বার বার তাকে প্রশ্ন করলেও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কারা কারা জড়িত তাদের নাম বলতে পারেনি। নিহত মিলনের ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও নিয়ে গেছে হত্যাকারীরা। ওই মুঠোফোনে সব ধরনের তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে বলে তিনি দাবী করেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। রাতে তাকে আটকের খবর পেয়ে পুলিশের দুটি দল ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আমরা তদন্ত করছি। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।